অ্যাপল তাদের ৩০০ কোটিতম আইফোন পাঠিয়েছে: একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক

অ্যাপল ৩০০ কোটিতম আইফোন পাঠিয়েছে বলে সিইও টিম কুক ঘোষণা করেছেন। জানুন কীভাবে আইফোন বিক্রি অ্যাপলের সাফল্যের চাবিকাঠি।

আনিস আফিফি
লিখেছেন:
আনিস আফিফি
লিখেছেন:আনিস আফিফি
সম্পাদক
আমি আনিস আফিফি — একজন উদ্যোক্তা এবং ওয়েব ডেভেলপার, যার একটি বড় স্বপ্ন হলো মানবজাতির জন্য পৃথিবীকে আরও ভালো একটি জায়গায় পরিণত করা। আমি ব্র্যান্ড তৈরি...
- সম্পাদক
ছবির সৌজন্যে: ডেনিস চেরকাশিন / আনস্প্লাশ

গত এক বছরে অ্যাপল তাদের এআই-এর ভুল পদক্ষেপ থেকে শুরু করে নতুন ডিজাইন দর্শনের জন্য বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিন্তু সংখ্যা মিথ্যা বলে না, এবং অ্যাপল যদি কিছুতে পারদর্শী হয়, তা হলো আইফোন বিক্রি। বিশেষ করে, ৩০০ কোটি আইফোন, যা কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক আজকের আয়ের রিপোর্টে ঘোষণা করেছেন।

এটি নিজেই একটি চিত্তাকর্ষক সংখ্যা, তবে এটি আরও বিস্ময়কর যখন আমরা লক্ষ্য করি যে অ্যাপল তাদের গতি বাড়াচ্ছে। আইফোন ২০০৭ সালে প্রথম চালু হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে, নয় বছর পরে, কোম্পানি ১০০ কোটি আইফোন বিক্রি করেছিল। ২০০ কোটিতে পৌঁছাতে মাত্র পাঁচ বছর লেগেছিল; এরপর থেকে আরেকটি ১০০ কোটি বিক্রি করতে মাত্র চার বছর সময় লেগেছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আইফোনের প্রতি অ্যান্ড্রয়েডের তুলনায় বেশি পছন্দের প্রবণতা বিবেচনা করলে, এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে হয়।

একটি ঝুড়িতে অনেক ডিম

তবে, এটি একটি ঝুড়িতে অনেক ডিম রাখার মতো। অ্যাপলের নিজস্ব এডি কিউ সম্প্রতি স্বীকার করেছেন, “আগামী দশ বছরে আপনার হয়তো আইফোনের প্রয়োজন পড়বে না।” যদি আপনার সবচেয়ে বড় ব্যবসা ফোন বিক্রির উপর নির্ভর করে, তবে এটি বেশ উদ্বেগজনক হওয়া উচিত! অ্যাপলের ভবিষ্যৎমুখী ফর্ম ফ্যাক্টরে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টাও ঠিক বিশ্বকে মুগ্ধ করেনি। এআই ফিচার যুক্ত করার প্রথম প্রচেষ্টায় তারা বেশ বিখ্যাতভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বাইরে থেকে দেখে মনে হয়, আগামী দশ বছরে আমরা যে বিশ্বে বাস করতে পারি, তার জন্য অ্যাপল তেমন প্রস্তুত নয়।

ভবিষ্যতের চিন্তা এবং টিম কুকের দৃষ্টিভঙ্গি

এই দ্বিধা স্পষ্টতই টিম কুকের মনে রয়েছে। আয়ের রিপোর্টে ফোনগুলোর প্রভাবশালী মোবাইল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, কোম্পানি “অন্যান্য বিষয় নিয়েও ভাবছে,” তবে মনে করেন উদীয়মান প্রযুক্তিগুলো “সম্ভবত পরিপূরক ডিভাইস হবে, প্রতিস্থাপন নয়।” স্বল্পমেয়াদে ফোনগুলো নিশ্চিতভাবে নিরাপদ মনে হয়, তবে স্যাম অল্টম্যান এবং জনি আইভ যা তৈরি করছেন, তা হয়তো অ্যাপলের ৪০০ কোটিতম আইফোন বিক্রির পথে কিছুটা বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

অ্যাপলের এই অর্জন তাদের বাজারে আধিপত্যের প্রমাণ, তবে এটি একটি চ্যালেঞ্জও তৈরি করে। আইফোনের এই অভূতপূর্ব বিক্রি তাদের আয়ের প্রায় অর্ধেক অবদান রাখে, যা গত ত্রৈমাসিকে ৯৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। তবে, ভবিষ্যতে স্মার্টফোনের বাইরে নতুন পণ্য বা পরিষেবা তৈরি না করতে পারলে অ্যাপলের এই সাফল্য ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আইফোনের জনপ্রিয়তা

বাংলাদেশে আইফোনের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে, বিশেষ করে শহুরে তরুণদের মধ্যে। আইফোনের প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড ইমেজ এবং উন্নত ফিচারগুলো বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের কাছে আকর্ষণীয়। তবে, উচ্চ শুল্ক এবং আমদানি খরচের কারণে আইফোনের দাম বাংলাদেশে অনেকের কাছে নাগালের বাইরে। অ্যাপলের ৩০০ কোটিতম আইফোন বিক্রির এই মাইলফলক বাংলাদেশের বাজারে তাদের সম্প্রসারণের সম্ভাবনা তুলে ধরে। যদি অ্যাপল স্থানীয় উৎপাদন বা কিস্তি অর্থায়নের মতো কৌশল গ্রহণ করে, তবে বাংলাদেশে তাদের বাজার আরও বাড়তে পারে।

অন্যদিকে, অ্যাপলের এআই-এর পিছিয়ে পড়া এবং নতুন ডিজাইন নিয়ে সমালোচনা বাংলাদেশের প্রযুক্তি-সচেতন ব্যবহারকারীদের মধ্যেও আলোচনার বিষয়। বাংলাদেশের অনেক তরুণ অ্যান্ড্রয়েড ফোনের তুলনায় আইফোনের ব্র্যান্ড মূল্য এবং ইকোসিস্টেম পছন্দ করলেও, তারা অ্যাপলের কাছ থেকে আরও উদ্ভাবনী ফিচার আশা করে।

Avatar Of আনিস আফিফি
লিখেছেন:আনিস আফিফি
সম্পাদক
ফলো:
আমি আনিস আফিফি — একজন উদ্যোক্তা এবং ওয়েব ডেভেলপার, যার একটি বড় স্বপ্ন হলো মানবজাতির জন্য পৃথিবীকে আরও ভালো একটি জায়গায় পরিণত করা। আমি ব্র্যান্ড তৈরি করি, ডিজিটাল সমস্যাগুলোর সমাধান করি। এবং এমন একটি ভবিষ্যত তৈরি করতে চাই যা মানুষকে ক্ষমতায়িত করে।
মন্তব্য নেই

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

০%