গত বছর যখন আমাজন (Amazon) এআই স্টার্টআপ অ্যাডেপ্টের (Adept) প্রতিষ্ঠাতাদের নিয়োগ করেছিল, তখন এটি ছিল একটি নতুন ধরনের ব্যবসায়িক কৌশলের প্রথম উদাহরণ, যা এখন ‘রিভার্স অ্যাকুইহায়ার’ (Reverse Acquihire) নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়ায় কোনো বড় কোম্পানি কোনো স্টার্টআপের পুরো প্রতিষ্ঠান কিনে নেওয়ার পরিবর্তে তার মূল দলের সদস্যদের নিয়োগ করে এবং তাদের প্রযুক্তির লাইসেন্স নেয়।
অ্যাডেপ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক সিইও ডেভিড লুয়ান (David Luan) এখন আমাজনের নতুন এজিআই ল্যাবের (AGI Lab) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি দ্য ভার্জের (The Verge) সাংবাদিক অ্যালেক্স হিথের (Alex Heath) সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে লুয়ান আমাজনের এআই এজেন্টদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করলেও, রিভার্স অ্যাকুইহায়ার প্রবণতা নিয়েও প্রশ্নের মুখোমুখি হন।
লুয়ান বলেন, “আমি চাই মানুষ আমাকে একজন এআই গবেষণার উদ্ভাবক (AI Research Innovator) হিসেবে মনে রাখুক, ব্যবসায়িক কাঠামোর উদ্ভাবক হিসেবে নয়।” তিনি আরও জানান, আমাজনের মতো কোম্পানির জন্য এই মুহূর্তে প্রতিভা (Talent) এবং কম্পিউটিং শক্তি (Compute) একত্রিত করা “পুরোপুরি যৌক্তিক”।
কেন তিনি নিজের স্টার্টআপ অ্যাডেপ্ট ছেড়ে আমাজনে যোগ দিলেন? এ প্রশ্নের জবাবে লুয়ান বলেন, তিনি অ্যাডেপ্টকে এমন একটি এন্টারপ্রাইজ কোম্পানিতে রূপান্তরিত করতে চাননি, যেটি শুধু ছোট আকারের মডেল (Small Models) বিক্রি করে। তার লক্ষ্য ছিল এজিআই (Artificial General Intelligence) গবেষণার বাকি চারটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান করা। তিনি বলেন, “এই সমস্যাগুলোর প্রতিটি সমাধানের জন্য দুই অঙ্কের বিলিয়ন ডলারের ক্লাস্টার (Two-Digit Billion-Dollar Clusters) প্রয়োজন। আমি আর কীভাবে এমন সুযোগ পেতাম?”
লুয়ানের এই বক্তব্য বাংলাদেশের প্রযুক্তি উৎসাহীদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে এআই গবেষণা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও, আমাজনের মতো বৈশ্বিক জায়ান্টদের এই ধরনের কৌশল ভবিষ্যতে স্থানীয় স্টার্টআপগুলোর জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। তবে এটিও সত্য যে, এ ধরনের রিভার্স অ্যাকুইহায়ার স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতাদের জন্য বড় সিদ্ধান্তের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়—নিজের স্বাধীনতা বজায় রাখা, নাকি বড় প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জন।
লুয়ানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটা স্পষ্ট যে, তিনি এআই গবেষণায় বড় ধরনের অবদান রাখতে চান, এবং আমাজনের মতো সংস্থার সংস্থান (Resources) তাকে সেই সুযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, এই ধরনের গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য আরও বিনিয়োগ এবং সহযোগিতার প্রয়োজন, যাতে স্থানীয় প্রতিভারাও বিশ্বমঞ্চে অবদান রাখতে পারে।