মেটা (Meta) শুধু গুগল (Google) এবং ওপেনএআই (OpenAI)-এর কর্মীদের নিয়োগের মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে না, বরং প্রতিযোগীদের এআই মডেল ব্যবহারের মাধ্যমেও নিজের অ্যাপগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। দ্য ইনফরমেশন (The Information)-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেটা তার নিজস্ব অ্যাপগুলোর এআই ফিচার উন্নত করতে প্রতিযোগী সংস্থাগুলোর মডেল ব্যবহারের কথা বিবেচনা করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেটা সুপারইন্টেলিজেন্স ল্যাব (Superintelligence Lab)-এর নেতৃবৃন্দ গুগল জেমিনি (Google Gemini) মডেলকে তাদের মেটা এআই চ্যাটবটে (chatbot) যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এটি ব্যবহারকারীদের সার্চ প্রশ্নের উত্তরে কথোপকথনমূলক এবং টেক্সট-ভিত্তিক সমাধান প্রদানে সহায়তা করবে। শুধু গুগল জেমিনিই নয়, মেটা ওপেনএআই-এর মডেলগুলো ব্যবহার করেও মেটা এআই এবং এর অ্যাপগুলোর এআই ফিচার শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা করেছে।
মেটার একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কোম্পানিটি সর্বোত্তম এআই পণ্য তৈরির জন্য একটি “সবকিছু একসঙ্গে” (all-of-the-above) পদ্ধতি অনুসরণ করছে। এর মধ্যে রয়েছে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং নিজস্ব এআই মডেল তৈরি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাহ্যিক এআই মডেল ব্যবহার একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ, যা মেটার নিজস্ব লামা (Llama) এআই মডেলের উন্নয়নে সহায়তা করবে। এটি মেটাকে বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সক্ষম করবে।
এছাড়াও, মেটার কর্মীদের ইতোমধ্যে অ্যানথ্রপিক (Anthropic)-এর এআই মডেল ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, যা কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কোডিং সহকারী (coding assistant) চালনায় সহায়তা করে। এদিকে, মেটা তার সুপারইন্টেলিজেন্স ল্যাব গঠনের জন্য গুগল এবং ওপেনএআই থেকে এআই গবেষকদের নিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় বেতন প্যাকেজ প্রদান করছে।
এই পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের প্রযুক্তি উৎসাহীদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। মেটার এই প্রচেষ্টা বিশ্বব্যাপী এআই প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অ্যাপ ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করতে পারে। তবে, এই প্রতিযোগিতামূলক পদক্ষেপ কীভাবে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা এবং তথ্য নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।
মেটার এই উদ্যোগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তরুণ ডেভেলপার এবং গবেষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। এআই প্রযুক্তির এই দৌড়ে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।