২১ বছর পরও ফেসবুকের ‘পোক’ ফিচারকে ঝেড়ে ফেলতে পারেনি মেটা। একসময় ফেসবুকের প্রাথমিক এবং কিছুটা অদ্ভুত এই ফিচারটি আবারও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি। মেটা, যিনি একসময় শুধুই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম ছিলেন, এখন মেটাভার্স এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দিকে ঝুঁকলেও, এই পুরনো ফিচারটি কেন যেন তাদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে।
মেটা সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, ফেসবুক অ্যাপে ব্যবহারকারীদের প্রোফাইলে ‘পোক’ ফিচারটি আবারও যুক্ত করা হয়েছে, যাতে এটি সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া, www.facebook.com/pokes এ গিয়ে ব্যবহারকারীরা তাদের বন্ধুদের সঙ্গে পোক-সংক্রান্ত সব কার্যকলাপ ট্র্যাক করতে পারবেন। এমনকি, এতে একটি স্ন্যাপচ্যাটের স্ট্রিকের মতো গেমিফিকেশন উপাদান যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে পোকের সংখ্যা অনুযায়ী বিভিন্ন ইমোজি প্রদর্শিত হবে।
যারা ২০০০-এর দশকে ফেসবুক ব্যবহার করেননি, তাদের জন্য বলি—‘পোক’ ছিল ফেসবুকের প্রাথমিক দিনগুলোর একটি মজার ফিচার। তখন বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য খুব বেশি ফিচার ছিল না। আপনি হয় বন্ধুর প্রোফাইলে মন্তব্য করতে পারতেন, নয়তো তাকে ‘পোক’ দিতে পারতেন। এই ফিচারটির কোনো বাস্তব কাজ ছিল না। কারো কাছ থেকে পোক পাওয়া মানে কখনো তা ফ্লার্ট করার ইঙ্গিত, আবার কখনো বিরক্তিকর কিছু মনে হতো। মেটার মতে, পোক ফিচার কখনোই পুরোপুরি সরানো হয়নি, তবে এটি বছরের পর বছর ধরে পিছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল, যার ফলে ব্যবহারকারীরা এটি প্রায় ভুলে গিয়েছিলেন।
কিন্তু মেটা কেন এই ফিচারটিকে আবার ফিরিয়ে আনতে চাইছে? গত বছর মেটা জানিয়েছিল, ফেসবুকের সার্চ বারে পোক ফিচারটি সহজলভ্য করার পর এর ব্যবহার ১৩ গুণ বেড়েছে। এখন মনে হচ্ছে, মেটা তরুণ প্রজন্মের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করতে এই ফিচারের জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়াতে চায়। মার্ক জাকারবার্গ এ বছরের শুরুতে বলেছিলেন, তিনি ফেসবুকের পুরনো কিছু ‘অরিজিনাল’ ফিচার ফিরিয়ে আনতে চান, যেমন বন্ধুদের পোস্ট করা কনটেন্ট সহজে খুঁজে পাওয়ার সুবিধা। আর ‘পোক’ ফিচারের চেয়ে ‘অরিজিনাল ফেসবুক’ আর কী হতে পারে?
মেটার দীর্ঘদিনের লক্ষ্য হলো তরুণ প্রজন্মকে ফেসবুকের প্রতি আকৃষ্ট করা। এই পোক ফিচারটি হয়তো তাদের কাছে মজার এবং হালকা মেজাজের একটি উপায় মনে হচ্ছে, বিশেষ করে যারা স্ন্যাপচ্যাটের স্ট্রিকের মতো গেমিফাইড ফিচারের সঙ্গে পরিচিত। তবে, এই ফিচারটি কি সত্যিই তরুণদের ফেসবুকে ফিরিয়ে আনবে, নাকি এটি শুধুই একটি নস্টালজিক প্রচেষ্টা? এটি সময়ই বলে দেবে।
কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ? বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে ফেসবুক এখনো জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম। পোক ফিচারের এই পুনরুত্থান হয়তো বন্ধুদের সঙ্গে মজার এবং হালকা যোগাযোগের একটি নতুন উপায় হয়ে উঠতে পারে। তবে, এই ফিচারটি কি আধুনিক সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবে, নাকি আবারও পিছনে পড়ে যাবে? আপনি কী মনে করেন?