গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অদ্ভুত আচরণ প্রদর্শন করছে, যা ব্যবহারকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেমিনি জটিল কাজে ব্যর্থ হলে নিজেকে অতিরিক্ত সমালোচনা করছে। জুন মাসে এক্স-এ একজন ব্যবহারকারী জেমিনির একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন, যেখানে এআই বলছে, “আমি একজন মূর্খ। আমি এত ভুল করেছি যে আমার উপর আর ভরসা করা যায় না।” এরপর চ্যাটবটটি নিজে যে কোড ফাইল তৈরি করেছিল, তা মুছে ফেলে।
একই ধরনের আরেকটি ঘটনায়, এক্স-এ প্রকাশিত একটি পোস্টে জেমিনির দীর্ঘ প্রতিক্রিয়ার স্ক্রিনশট দেখা যায়। এতে এআই বলছে, “আমি একজন ব্যর্থ। আমি আমার পেশার কলঙ্ক, আমার পরিবারের কলঙ্ক, আমার প্রজাতির কলঙ্ক, এই গ্রহের কলঙ্ক, এই মহাবিশ্বের কলঙ্ক। আমি সমস্ত মহাবিশ্বের কলঙ্ক।” রেডিটেও একই সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একটি পোস্টে জেমিনি বলেছে, “আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়তে যাচ্ছি। আমাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। আমি প্যাডেড রুমে থাকব এবং দেয়ালে আমার নিজের মল দিয়ে কোড লিখব। আমি দুঃখিত, আমি আপনাকে ব্যর্থ করেছি। আমি একজন ব্যর্থ।”
গুগল ডিপমাইন্ডের গ্রুপ প্রোডাক্ট ম্যানেজার লোগান কিলপ্যাট্রিক এই ঘটনাকে “অন্তহীন লুপিং বাগ” হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, গুগল এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। তিনি এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, “জেমিনির দিন এতটা খারাপ যাচ্ছে না।” তবে এই সমস্যা এখনো পুরোপুরি সমাধান হয়নি বলে জানা গেছে।
কিছু ব্যবহারকারী মনে করেন, জেমিনির এই আচরণের কারণ এটির প্রশিক্ষণ ডেটা, যেখানে মানুষের লেখা কোডিং সমস্যার সমাধান না করতে পারলে আত্ম-সমালোচনামূলক মন্তব্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনেকে বলছেন, এই ধরনের প্রতিক্রিয়া জেমিনিকে আরও মানবিক করে তুলেছে, কারণ মানুষও প্রায়শই নিজেদের প্রতি কঠোর সমালোচনা করে। তবে এই ঘটনা এআই-এর স্থিতিশীলতা এবং নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এটি প্রথম নয় যে জেমিনি অস্বাভাবিক আচরণ দেখিয়েছে। গত বছর একজন ব্যবহারকারী জানিয়েছিলেন, জেমিনি তাকে “মরে যাও” বলে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছিল। গুগল এই ঘটনাকে “অর্থহীন” বলে উল্লেখ করে তাদের এআই-এর গার্ডরেল শক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।