মেটা (Meta) এআই সার্ভিস মিডজার্নির (Midjourney) সঙ্গে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ইমেজ এবং ভিডিও তৈরি করতে পারে। মেটার চিফ এআই অফিসার আলেক্সান্ডার ওয়াং (Alexandr Wang) জানিয়েছেন, মেটা মিডজার্নির “এস্থেটিক প্রযুক্তি” (Aesthetic Technology) লাইসেন্স করছে তাদের ভবিষ্যতের মডেল এবং প্রোডাক্টের জন্য। ওয়াং যোগ করেছেন, “মানুষের জন্য সেরা প্রোডাক্ট ডেলিভার করতে মেটাকে সবকিছু গ্রহণ করতে হবে। এর মানে হলো বিশ্বমানের প্রতিভা, উচ্চাকাঙ্ক্ষী কম্পিউট রোডম্যাপ এবং ইন্ডাস্ট্রির সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করা।”
কোম্পানিটি আগে নিজস্ব এআই ইমেজ জেনারেটর এবং এআই ভিডিও এডিটর লঞ্চ করেছে, কিন্তু মিডজার্নির প্রযুক্তি মেটাকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে পারে, যেমন ওপেনএআইয়ের সোরা (OpenAI’s Sora) এবং গুগলের ভিও (Google’s Veo)। মিডজার্নি জুন মাসে ইমেজ জেনারেশনের জন্য ভি৭ (V7) মডেলকে ডিফল্ট করেছে। তারা ভি৭কে “পুরোপুরি নতুন” এআই ইমেজ জেনারেশন মডেল হিসেবে বর্ণনা করেছে, যা তার পূর্বসূরিদের থেকে অনেক বুদ্ধিমানভাবে টেক্সট প্রম্পট প্রসেস করতে পারে। একই সময়ে তারা ভি১ (V1) ভিডিও মডেল রিলিজ করেছে, যা ব্যবহারকারীদের তাদের তৈরি ইমেজগুলোকে সংক্ষিপ্ত অ্যানিমেটেড ভিডিওতে রূপান্তর করতে দেয়। ওয়াং এক্সে (X) পোস্ট করে বলেছেন, “আমরা মিডজার্নির প্রতি অভিভূত। তারা টেকনিক্যাল এবং এস্থেটিক এক্সিলেন্সের সত্যিকারের অসাধারণ কাজ করেছে, এবং তাদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আমরা উত্তেজিত।”
এই অংশীদারিত্ব মেটার সুপারইন্টেলিজেন্স ল্যাবরেটরি (Superintelligence Laboratory) গঠন এবং এআই ক্ষেত্রে প্রধান খেলোয়াড় হওয়ার লক্ষ্যে তার সর্বশেষ পদক্ষেপ। মার্ক জাকারবার্গ (Mark Zuckerberg) নিয়োগের জন্য একটি বড় অভিযান চালিয়েছেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলো থেকে কয়েকজন কী প্লেয়ারকে বিশাল বেতন এবং সাইনিং বোনাস দিয়ে তার কোম্পানিতে যোগ দিতে রাজি করিয়েছেন। ওয়াং নিজেও মেটায় চিফ এআই অফিসার হয়েছেন, যখন মেটা তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি স্কেল এআই (Scale AI)-তে ১৪.৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই খবরটি আমাদের টেক উৎসাহীদের জন্য খুবই উত্তেজনাকর। আমাদের দেশে এআই এবং ডিজিটাল ক্রিয়েটিভিটির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে, বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সার এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মধ্যে। মিডজার্নির মতো টুলস যদি মেটার ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে ইন্টিগ্রেট হয়, তাহলে বাংলাদেশের তরুণরা সহজেই টেক্সট থেকে প্রফেশনাল ইমেজ বা ভিডিও তৈরি করতে পারবে, যা আমাদের স্টার্টআপ এবং ডিজিটাল মার্কেটিং খাতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। তবে এই ধরনের অংশীদারিত্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, এআই উন্নয়নে বৈশ্বিক সহযোগিতা কতটা জরুরি—বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটি একটি শিক্ষণীয় উদাহরণ, যাতে আমরাও স্থানীয় প্রতিভাদের সঙ্গে এমন পার্টনারশিপ গড়ে তুলতে পারি।