মেটা এই সপ্তাহে তাদের সর্বশেষ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) প্রোটোটাইপগুলোর এক ঝলক দেখিয়েছে, যেগুলোর স্পেসিফিকেশন বেশ চিত্তাকর্ষক এবং ডিজাইনে সাহসী। এর মধ্যে অন্যতম হলো তাদের ‘তিরামিসু’ প্রকল্প, যাকে তারা “হাইপাররিয়ালিস্টিক ভিআর” নামে অভিহিত করেছে। এই হেডসেটটি মেটা কোয়েস্ট ৩-এর তুলনায় তিন গুণ বেশি কনট্রাস্ট, ১৪ গুণ বেশি সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতা এবং ৩.৬ গুণ বেশি অ্যাঙ্গুলার রেজোলিউশন প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়। সংখ্যার হিসেবে, এটি ১,৪০০ নিট উজ্জ্বলতা এবং প্রতি ডিগ্রিতে ৯০ পিক্সেলের অ্যাঙ্গুলার রেজোলিউশন নিয়ে আসে।
মেটার রিয়েলিটি ল্যাবস রিসার্চের অপটিক্স, ফোটোনিক্স অ্যান্ড লাইট সিস্টেমস (ওপিএএলএস) দলের লক্ষ্য হলো এমন একটি ভিআর অভিজ্ঞতা তৈরি করা, যা বাস্তব জগতের থেকে পৃথক করা যায় না—যাকে তারা ‘ভিজ্যুয়াল টিউরিং টেস্ট’ বলে অভিহিত করেছে। ওপিএএলএস-এর অপটিক্যাল গবেষণা বিজ্ঞানী শুয়ান ওয়াং বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল সর্বোচ্চ মানের ছবি প্রদান করা।” তবে, এই উচ্চমানের ছবি পেতে কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তিরামিসুর দৃষ্টিক্ষেত্র (ফিল্ড অফ ভিউ) মাত্র ৩৩ ডিগ্রি বাই ৩৩ ডিগ্রি, যেখানে মেটা কোয়েস্ট ৩-এর দৃষ্টিক্ষেত্র ১১০ ডিগ্রি অনুভূমিক এবং ৯৬ ডিগ্রি উল্লম্ব। এছাড়া, এই হেডসেটটির বর্তমান ডিজাইন বেশ ভারী এবং বড় আকারের, যা ব্যবহারকারীদের জন্য এখনও ব্যবহারিক নয়।
মেটার ব্লগ পোস্টে আরও দুটি প্রোটোটাইপের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে, যেগুলো হলো ‘বোবা ৩’ হেডসেট। এই মিশ্র এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেটগুলো অতি-প্রশস্ত দৃষ্টিক্ষেত্র প্রদান করে। এই তিনটি প্রকল্পই আগামী সপ্তাহে ভ্যাঙ্কুভারে অনুষ্ঠিতব্য সিগ্রাফ ২০২৫ সম্মেলনে প্রদর্শিত হবে।
বাংলাদেশের প্রযুক্তি উৎসাহীদের জন্য এটি একটি উত্তেজনাপূর্ণ খবর। ভিআর প্রযুক্তির এই অগ্রগতি ভবিষ্যতে গেমিং, শিক্ষা এবং বিনোদনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। তবে, তিরামিসুর মতো প্রোটোটাইপগুলোর ভারী ডিজাইন এবং সীমিত দৃষ্টিক্ষেত্রের সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এগুলো সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছানো কঠিন হতে পারে। তবু, মেটার এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে ভিআর-এর ভবিষ্যৎ আরও বাস্তবসম্মত এবং মুগ্ধকর হতে চলেছে।