মাইক্রোসফট ঘোষণা করেছে যে, ২০২৬ সালের জানুয়ারির শেষে অফিস ৩৬৫-এর পুরোনো সংস্করণগুলোতে ট্রান্সক্রিপশন, ডিকটেশন এবং রিড অ্যালাউড ফিচারগুলো কাজ করা বন্ধ করবে। এই ফিচারগুলো ব্যবহারকারীদের উৎপাদনশীলতা এবং অ্যাক্সেসিবিলিটি বাড়ায়। রিড অ্যালাউড ফিচারটি ব্যবহারকারীদের ডকুমেন্ট এবং ইমেইল পড়ে শোনায়, ট্রান্সক্রিপশন বক্তৃতাকে রিয়েল-টাইমে টেক্সটে রূপান্তর করে, আর ডিকটেশন ফিচার অফিস অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে ভয়েসের মাধ্যমে টেক্সট ইনপুট দেওয়ার সুবিধা দেয়।
কোম্পানিটি গ্রাহকদের পরামর্শ দিয়েছে যে, এই অ্যাক্সেসিবিলিটি এবং উৎপাদনশীলতা ফিচারগুলোর অ্যাক্সেস ধরে রাখতে ২০২৬ সালের জানুয়ারির শেষ নাগাদ মাইক্রোসফট ৩৬৫ অফিস অ্যাপগুলো ১৬.০.১৮৮২৭.২০২০২ সংস্করণের (জুলাইয়ের শুরুতে প্রকাশিত) উপরে আপডেট করতে হবে। এই সময়সীমা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানকে তাদের সফটওয়্যার পরিবেশে প্রয়োজনীয় আপডেট পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য প্রায় এক বছর সময় দেয়।
তবে, মাইক্রোসফট জানিয়েছে, সরকারি ক্লাউড গ্রাহকদের (জিসিসি, জিসিসি হাই এবং ডিওডি পরিবেশে ব্যবহারকারী) জন্য আরও দুই মাস সময় দেওয়া হবে, অর্থাৎ ২০২৬ সালের মার্চ পর্যন্ত।
মাইক্রোসফট গত শুক্রবার একটি মেসেজ সেন্টার বার্তায় বলেছে, “মাইক্রোসফট ৩৬৫ অফিস অ্যাপগুলোতে রিড অ্যালাউড, ট্রান্সক্রিপশন এবং ডিকটেশন ফিচারগুলোর উচ্চ-মানের পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে আমরা এই ক্ষমতাগুলোর পেছনের ব্যাকএন্ড সার্ভিস আপগ্রেড করছি। ফলে, ২০২৬ সালের জানুয়ারির পর ১৬.০.১৮৮২৭.২০২০২-এর নিচের সংস্করণে চলা অফিস ক্লায়েন্টগুলোতে এই ফিচারগুলো আর কাজ করবে না।”
এই পরিবর্তন মাইক্রোসফটের ভয়েস-সক্ষম ক্ষমতাগুলোর ব্যাকএন্ড সার্ভিস আপগ্রেডের সিদ্ধান্ত থেকে উদ্ভূত। নির্দিষ্ট সংস্করণের নিচে চলা অফিস ক্লায়েন্ট ব্যবহারকারীরা সময়সীমার পর এই ফিচারগুলোর অ্যাক্সেস হারাবেন। তবে, ১৬.০.১৮৮২৭.২০২০২-এর উপরের সংস্করণে চলা ক্লায়েন্টরা এই আপগ্রেডের দ্বারা প্রভাবিত হবে না এবং তাদের বর্তমান কার্যকারিতায় কোনো পরিবর্তন হবে না।
এছাড়া, মাইক্রোসফট গত মে মাসে ঘোষণা করেছিল যে, এই বছরের শেষে উইন্ডোজ ১০-এ অফিস অ্যাপগুলোর জন্য সমর্থন বন্ধ হবে, তবে ২০২৮ সাল পর্যন্ত নিরাপত্তা আপডেট প্রদান অব্যাহত থাকবে। এপ্রিলে কোম্পানিটি আরও মনে করিয়ে দিয়েছিল যে, অফিস ২০১৬ এবং অফিস ২০১৯-এর বর্ধিত সমর্থন আগামী দুই মাসের মধ্যে, অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১৪ অক্টোবর শেষ হবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাৎপর্য
বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ফ্রিল্যান্সারদের জন্য মাইক্রোসফট অফিস ৩৬৫ একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম। বিশেষ করে ট্রান্সক্রিপশন এবং ডিকটেশনের মতো ভয়েস ফিচারগুলো ফ্রিল্যান্সার এবং কনটেন্ট নির্মাতাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ায়, যখন রিড অ্যালাউড ফিচারটি শিক্ষার্থী এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অ্যাক্সেসিবিলিটি নিশ্চিত করে। এই ফিচারগুলো বন্ধ হওয়ার ঘোষণা বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য সফটওয়্যার আপডেটের গুরুত্ব তুলে ধরে।
বাংলাদেশের অনেক ছোট ব্যবসা এবং প্রতিষ্ঠান এখনও পুরোনো সংস্করণের অফিস অ্যাপ ব্যবহার করে, যা আর্থিক সীমাবদ্ধতা বা প্রযুক্তিগত অজ্ঞতার কারণে হতে পারে। মাইক্রোসফটের এই সময়সীমা তাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা, যাতে তারা সময়মতো আপডেট করে এই গুরুত্বপূর্ণ ফিচারগুলোর অ্যাক্সেস ধরে রাখতে পারে। বাংলাদেশের প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং আইটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এই সুযোগে ব্যবহারকারীদের আপডেটে সহায়তা করতে পারে। তবে, যেসব প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি আপডেট করতে ব্যর্থ হয়, তারা উৎপাদনশীলতা এবং অ্যাক্সেসিবিলিটির দিক থেকে পিছিয়ে পড়তে পারে।