নেপাল সরকার সম্প্রতি একটি কঠোর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশের ডিজিটাল জগতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। ফেসবুক (Facebook), ইউটিউব (YouTube), এক্স (X), ইনস্টাগ্রাম (Instagram), উইচ্যাট (WeChat), রেডিট (Reddit)-সহ ২৬টি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো নেপালের সরকারের কাছে নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে, টিকটক (TikTok), ভাইবার (Viber), উইটক (WeTalk), নিমবাজ (Nimbuzz), এবং পপো লাইভ (Popo Live)-এর মতো পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করায় এই নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত রয়েছে।
নেপালের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গজেন্দ্র কুমার ঠাকুর জানিয়েছেন, “যেসব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিবন্ধন করেনি, তাদের সেবা আজ থেকে বন্ধ করা হবে।” সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে স্থানীয় যোগাযোগ ব্যক্তি, অভিযোগ নিষ্পত্তিকারী কর্মকর্তা এবং স্ব-নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি নিয়োগ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-এর মতো বড় প্ল্যাটফর্মগুলো এই নির্দেশনা মানেনি।
নেপাল সরকারের এই পদক্ষেপ ২০২৩ সালের একটি নির্দেশনার অংশ, যা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে আরও দায়িত্বশীল এবং জবাবদিহিমূলক করার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছিল। সরকারের দাবি, এই নিয়মের মাধ্যমে অনলাইনে ঘৃণা ছড়ানো, গুজব এবং সাইবার অপরাধ (cybercrime) কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে, এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম অধিকার সংগঠন এবং নাগরিক সমাজ। নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (Committee to Protect Journalists) এই পদক্ষেপকে “গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য বিপজ্জনক” বলে আখ্যায়িত করেছে। ফেডারেশন অব নেপালি জার্নালিস্টস (Federation of Nepali Journalists) বলেছে, এটি “সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের তথ্য পাওয়ার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।”
ডিজিটাল রাইটস নেপালের (Digital Rights Nepal) প্রেসিডেন্ট ভোলা নাথ ধুঙ্গানা বলেছেন, “সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করা ভুল নয়, তবে এর জন্য প্রথমে একটি শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রয়োজন। এমন আকস্মিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ন্ত্রণমূলক মনোভাবের প্রতিফলন।” তিনি আরও জানান, নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া শুধুমাত্র বিনোদন বা যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি অনেকের জন্য খবর, ব্যবসা এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিবারের সঙ্গে সংযোগের প্রধান মাধ্যম।
নেপালের ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ৯০ শতাংশের বেশি, এবং স্ট্যাটকাউন্টারের (Statcounter) তথ্য অনুযায়ী, দেশের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৮৭% ফেসবুক, ৬% এক্স এবং ৫% ইউটিউব ব্যবহার করে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে নেপালের নাগরিকদের দৈনন্দিন যোগাযোগ, সংবাদ প্রাপ্তি এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে।
এই পদক্ষেপ শুধু নেপালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি আঞ্চলিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। ভারত, যিনি নেপালের প্রতিবেশী, ইতিমধ্যে সোশ্যাল