স্যামসাং সিইএস ২০২৫-এ প্রথম টিজ করার পর অবশেষে তাদের নতুন মাইক্রো আরজিবি ব্যাকলাইট প্রযুক্তির টিভি লঞ্চ করেছে। এই ১১৫ ইঞ্চির টিভি প্রথমে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাজারে এসেছে, যার দাম ৪৪.৯ মিলিয়ন কোরিয়ান ওন বা প্রায় ৩২,৩৬২ মার্কিন ডলার। স্যামসাং জানিয়েছে, এটি পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে এবং পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সাইজে পাওয়া যাবে।
মাইক্রো আরজিবি প্রযুক্তি মিনি এলইডি ব্যাকলাইটের তুলনায় একটি বড় উন্নতি। মিনি এলইডি টিভিতে ছোট সাদা বা নীল এলইডি ব্যবহৃত হয়, কিন্তু মাইক্রো আরজিবি ব্যাকলাইটে ১০০ মাইক্রোমিটারের চেয়েও ছোট লাল, সবুজ এবং নীল এলইডি ব্যবহার করা হয়, যা পৃথকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই প্রযুক্তি স্যামসাং-এর মাইক্রো আরজিবি এআই ইঞ্জিন দ্বারা চালিত, যা প্রতিটি ফ্রেম রিয়েল-টাইমে বিশ্লেষণ করে রঙের আউটপুট স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপ্টিমাইজ করে। ফলে দর্শকরা আরও জীবন্ত এবং গভীর দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। এই প্রযুক্তি রঙের নির্ভুলতা এবং কনট্রাস্ট উন্নত করে, এমনকি নিস্তেজ দৃশ্যেও রঙকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
মাইক্রো আরজিবি প্রযুক্তির আরেকটি বড় সুবিধা হলো এটি মাইক্রো এলইডি টিভির তুলনায় উৎপাদন খরচ কম। উদাহরণস্বরূপ, স্যামসাং-এর ১১০ ইঞ্চি মাইক্রো এলইডি টিভি যুক্তরাষ্ট্রে ১৫০,০০০ ডলারে বিক্রি হয়, যেখানে এই নতুন ১১৫ ইঞ্চি মাইক্রো আরজিবি টিভির দাম অনেক কম।
এই ৪কে টিভিতে আরও রয়েছে গেমিংয়ের জন্য ১৪৪ হার্টজ ভ্যারিয়েবল রিফ্রেশ রেট, এআই আপস্কেলিং, এইচডিআর১০+ সাপোর্ট, ৭০ ওয়াটের ৪.২.২ স্পিকার সেটআপ যা ডলবি অ্যাটমস সমর্থন করে, চারটি এইচডিএমআই ২.০ পোর্ট, দুটি ইউএসবি-এ পোর্ট, ওয়াই-ফাই, এবং ব্লুটুথ। এটি ম্যাটার কন্ট্রোলার হিসেবেও কাজ করতে পারে এবং ফিলিপস হিউ লাইট ব্যবহারকারীদের জন্য টিভির দৃশ্যের সাথে লাইটের রঙ সিঙ্ক করার সুবিধা রয়েছে।
স্যামসাং একমাত্র কোম্পানি নয় যারা এই উন্নত মিনি এলইডি প্রযুক্তির দিকে এগোচ্ছে। এ বছরের শুরুতে, সনি তাদের জেনারেল আরজিবি এলইডি ব্যাকলাইট প্রযুক্তি প্রদর্শন করেছে, যেখানে লাল, সবুজ এবং নীল এলইডি দিয়ে ব্যাকলাইট জোন তৈরি করা হয়। এছাড়া, সিইএস ২০২৫-এ হাইসেন্স তাদের ১১৬ ইঞ্চি ট্রাইক্রোমা এলইডি টিভি ঘোষণা করেছে, যেটিতে আরজিবি লোকাল ডিমিং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। হাইসেন্স দাবি করেছে তাদের টিভি বিটি.২০২০ কালার স্পেসের ৯৭ শতাংশ কভার করতে পারে, কিন্তু স্যামসাং বলছে তাদের মাইক্রো আরজিবি প্রযুক্তি ১০০ শতাংশ কভার করে, যা এটিকে বাজারে সবচেয়ে রঙের নির্ভুলতাসম্পন্ন টিভিগুলোর একটি করে তুলতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, এই টিভি উচ্চমানের গেমিং এবং হোম এন্টারটেইনমেন্টের জন্য একটি দুর্দান্ত পছন্দ হতে পারে। তবে এর উচ্চ মূল্য সাধারণ ক্রেতাদের জন্য বাধা হতে পারে। তবুও, প্রযুক্তি উৎসাহী এবং প্রিমিয়াম টিভি খুঁজছেন এমন ক্রেতাদের জন্য এটি একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে পারে।